রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫৩ অপরাহ্ন
স্পোর্টস রিপোর্টার, ই-কণ্ঠ টোয়েন্টিফোর ডটকম ॥ বুধবার ৮ জুন মালয়েশিয়াতে বাছাইয়ে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল র্যাংকিংয়ে ৯৯ ধাপ এগিয়ে থাকা বাহরাইন। কুয়ালা লামপুরে বুকিত জলিল জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ২-০ গোলে হারলেও শেষ পর্যন্ত লড়েছেন বাংলাদেশ দল।
প্রথমার্ধেই গোল দুই গোল খায় তারা। শক্তির বিচারে এগিয়ে থাকা দলটির বিপক্ষে পুরো ম্যাচজুড়েই বীরত্ত্বের সঙ্গে লড়াই করেছে বাংলাদেশ। গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর দারুণ কিছু সেভ সত্ত্বেও শক্তিশালী বাহরাইনের বিপক্ষে অনুমিতভাবেই হারল হাভিয়ের কাবরেরার দল।
আগামী শনিবার ১১ জুন ‘ই’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।
ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে আত্মবিশ্বাস সঙ্গী করে এশিয়ান কাপ (এফসি) বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুটা ভালো হলো না কাবরেরার দলের। রক্ষণ জমাট রাখতে শুরুর দিকে প্রায় সব খেলোয়াড়ই নেমে আসে নিচের দিকে।
তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে একটু একটু করে ছড়িয়ে খেলতে শুরু করে দল। তবে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল বাহরাইনের মুঠোয়ই। কর্নারে মোহামাদ বেনাদ্দির দুর্বল হেড ড্রপ খেয়ে ছুটছিল জালের দিকে, ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকান গোলরক্ষক, এরপর দ্রুত ক্লিয়ার করেন ডিফেন্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ।
১৯তম মিনিটে হাসান আলআসওয়াদের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া জোরালো শট আবার ঝাঁপিয়ে রুখে দেন গোলরক্ষক জিকো। ২২তম মিনিটে কোমাইল হাসান আল আসওয়াদের ফ্রি কিক গ্লাভসে নেন জিকো। একটু পর আলি আব্দুল্লাহ হারামের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া জোরাল শট ফিস্ট করে ফেরান তিনি। পরের মিনিটে আলী আব্দুল্লাহ হারামের শট প্রতিহত করেন গোলরক্ষক।
কিছু কিছু মুহ’র্তের আক্রমণে কাঁপন ধরছিল লাল-সবুজের রক্ষণে। তবে বাংলাদেশের সেটপিসের জন্য কপাল পুড়েছে মূলত। বাহরাইনের বিল্ডআপ সফলতার সঙ্গেই রুখে দিচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে সেটপিসে বাহরাইনের বিপক্ষে খেই হারিয়ে ফেলছিল তারা।
২৭তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে সুযোগ কড়া নেড়েছিল বাংলাদেশের দরজায়, কিন্তু রাকিব হোসেনের আড়াআড়ি ক্রসে গোলমুখে সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি সাজ্জাদ হোসেন। যা ছিল প্রথম সুবর্ণ সুযোগ। পুরো ম্যাচে বাংলাদেশ পারেনি আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে।
২৯তম মিনিটে সতীর্থের ব্যাক হিল ফ্লিকে রাশেদ খলিলের কোনাকুনি শট আটকে আবারও দলের ত্রাতা জিকো। পাঁচ মিনিট পর আর পারেননি বসুন্ধরা কিংসের এই গোলরক্ষক। কর্নার থেকে নিখুঁত হেডে কাছের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন আব্দুল্লাহ হারাম।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে বাংলাদেশের রক্ষণে প্রচ- চাপ দিতে থাকে বাহরাইন। ফাহাদ-ইয়াসিন আরাফাত-বাদশারা তা সামলাচ্ছিলেন বেশ, কিন্তু এরই মধ্যে ৪২তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের জোরাল নিচু শটে আল আসওয়াদ ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।
কাবরেরার দল ব্যবধানে আর হেরফের করতে না পারলেও ৫৫ মিনিটে সুযোগ তৈরি করেছিল বাহরাইন। কিন্তু আব্দুল্লাহ ইউসুফ হেলাল গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। জিকো ঝাঁপিয়ে পড়ে তা রুখে দিয়েছেন। বাহরাইনের এই ফরোয়ার্ডের শট ঝাঁপিয়ে আটকান ২৪ বছর বয়সী গোলরক্ষক।
এরপর একটু একটু করে খেলার গতি কমতে থাকে। বাহরাইনের মধ্যেও ব্যবধান বাড়ানোর মরিয়া ভাব ছিল না। ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন জেনে বাংলাদেশ রক্ষণে নিজেদের মুড়িয়ে নেয় আরও বেশি করে।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে ব্যবধান বাড়তে পারতো। সতীর্থের ব্যাক পাস ছুটে এসে সøাইড করে বিপদমুক্ত করেন জিকো। কিন্তু দারুণ সব সেভ করেও ইন্দোনেশিয়া ম্যাচের মতো স্বস্তির হাসি সঙ্গী হয়নি এই গোলরক্ষকের, বাংলাদেশ দলের।
৪৪ বছর আগে ১৯৭৯ সালে প্রেসিডেন্টস কাপে বাহরাইনের বিপক্ষে আগের একমাত্র দেখায়ও একই ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। বাহরাইনকে মাত্র ২ গোলে আটকে রাখার কৃতিত্বটা অবশ্য বাংলাদেশ গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর। প্রথমার্ধেই বাহরাইন গোটা চারেক গোলে এগিয়ে থাকতে পারতো।
জিকো দুর্দান্ত কিছু সেভ না করলে হারের ব্যবধান অনেক বেশি হতে পারতো।